land wস্টাফ রিপোর্টার: ভূমি সঙ্কট সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জমির সঙ্কটে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পই ঝুলে রয়েছে। তাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের পাশাপাশি ব্যয়ও বাড়ছে। এমনকি প্রকল্প বাতিলও করা হচ্ছে। মূলত জমি অধিগ্রহণ সমস্যাই হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রকল্পের ব্যয় ব্রদ্ধি ও বিলম্বের বড় কারণ।

অথচ প্রতি বছরই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার এডিপি থাকলেও বর্তামানে তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এডিপির আকার ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বিগত ৭ বছরে এডিপির আকার বহুগুণ বাড়লেও বাড়ছে না বাস্তবায়নের হার। সময়মতো প্রকল্প সময়মতো শেষ না করতে পারাই তার বড় কারণ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জমি সঙ্কটের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ঝুলে আছে। জমি না পাওয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বড় অবকাঠামো নির্মাণও মুখ থুবড়ে পড়েছে। জমিই পাওয়া যায় না। ওসব প্র

কল্পগুলো নেয়ার সময় জমির ফয়সালা করা যায় না। প্রকল্প পাস হতে সময় লাগায় জমির দামও বেড়ে যাচ্ছে। জমির সঙ্কট এতোটাই তীব্র যে বিভিন্ন স্থানে পৌরভবনও নির্মাণ করা যাচ্ছে না। মসজিদ, স্টেডিয়ামসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পগুলো ঝুলে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকের অফিসের চিঠি চালাচালি করেও লাভ হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, দেশের সব জেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি ৩ বছরে শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও ৮ বছরে গড়িয়েছে। প্রকল্পটির বড় সমস্যা জমি সঙ্কট। কারণ প্রকল্পে খাস জমি কিংবা দান করা জমিতে ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। কিছু জেলায় জমি পাওয়া গেলেও সব জেলাতে জমি পাওয়া যাচ্ছে না। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে সারাদেশে জমিপ্রাপ্তি এবং জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নানা আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ওই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। একইভাবে সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের জন্যও প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যাচ্ছে না। বিগত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের এডিপি অগ্রগতির পর্যালোচনা প্রতিবেদনেও শতভাগ বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে জমি সঙ্কটকে বড় কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ এমনকি আইন ও বিচার বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব এবং বাস্তবায়ন হার কম হওয়ার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ সমস্যাই ছিল বড়। একই বছরে দুর্নীতি দমন কমিশনের এডিপির একটি টাকাও ব্যয় সম্ভব হয়নি। কমিশনের নোয়াখালী ও হবিগঞ্জ সমন্বিত অফিস নির্মাণ প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ না পাওয়ায় বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয়নি। ফলে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১ হাজার ১০৫টি প্রকল্প চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চলমান আকারে থাকছে। তার বড় অংশ ভূমি জটিলতায় মেয়াদ বেড়েছে।

এ ভূমি জটিলতার বিষয়ে সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালা জানিয়েছেন, প্রকল্প অনুমোদনের আগে ভূমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব নয়, তাছাড়া বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বৃদ্ধির বড় কারণ জমির সঙ্কটট।

সাম্প্রতিক