primary eduস্টাফ রিপোর্টার: প্রধান শিক্ষক নেই দেশের হাজার হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ফলে ওসব স্কুলে নিয়মিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি ওসব স্কুলের শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যত কোনো পদক্ষেপও নেই। সহকারীরা শিক্ষকরাই ওসব স্কুরের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাতে স্কুলগুলোতে নানামুখী সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে যাদের যোগ্যতা থাকে তাদের প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু যেসব স্কুলের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের ওই যোগ্যতা নেই ওসব স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্যই থাকছে। আর একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও কোনো ভাতা নেই। বর্তমানে পুরনো সরকারি স্কুলগুলোতেও অসংখ্য পদ শূন্য রয়েছে। আর প্রতিনিয়তই শিক্ষকরা অবসরে যাচ্ছেন। ফলে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে প্রধান শিক্ষকবিহীন স্কুলের সংখ্যাও। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের পদটি ২০১৪ সালের ৯ মার্চ দ্বিতীয় শ্রেণীর নন-গেজেটেড পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু মামলাজনিত কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আর নানা জটিলতার কারণে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমেও ওই পদে নিয়োগ দেওয়া বন্ধ আছে। তাছাড়া ২০১৩ সালের বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে একজন সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলে প্রতিদিন ৫০ টাকা ভাতা পেতো। কিন্তু ২০১৩ সালে ওসব বেসরকারি স্কুল সরকারি হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদটি বিলুপ্ত হয়। একই সাথে ৫০ টাকা ভাতা বন্ধ করে দেয় মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য গতবছরের আগস্ট মাসে ৩৪তম বিসিএস থেকে ৮৯৮ জনকে সুপারিশ করা হয়। ওই নিয়োগের পর শিক্ষক সঙ্কট কিছুটা কমে আসছে। পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দিয়ে শূন্যপদ পূরণ করা হবে। প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ শতকরা ৩৫ ভাগ সরাসরি এবং ৬৫ ভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে দেয়া হবে। চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্যানেল এবং পুলভুক্ত সব শিক্ষককে নিয়োগ চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিগত ২০১১ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তির পর উত্তীর্ণ ৪৪ হাজার ৬০৯ জনের মধ্যে ১২ হাজার ৭০১ জনকে নিয়মিত সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। বাকি উত্তীর্ণদের মধ্যে ১৫ হাজার ১৯ জনকে ভবিষ্যতে নিয়োগের জন্য পুল শিক্ষক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। গত ২১ ডিসেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের শূন্য পদে পুলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের আদেশ জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। ওই প্রক্রিয়া চলতি মার্চের মধ্যেই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার। পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। তার মধ্যে নিয়োগ দেয়া হয় ৩২ হাজার ৯৬১ জনকে। আর নিয়োগের অপেক্ষায় ছিলো প্রায় ৭ হাজার উত্তীর্ণ প্রার্থী। এবার তাদেরই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ওই প্যানেলভুক্ত সব শিক্ষকের নিয়োগ ৩০ মার্চের মধ্যে শেষ করার সুপারিশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান জানান, নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা অবশিষ্ট শিক্ষকদের মার্চের মধ্যেই নিয়োগপত্র দিতে চায় মন্ত্রণালয়। তবে ওই সংখ্যা জানা যাবে মার্চের পর।

সাম্প্রতিক