dfgh6h8স্টাফ রিপোর্টার: দুর্নীতিকে নূন্যতম প্রশ্রয় না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। গতকাল বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে ভুটান দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। এতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এবং ভুটান দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারপারসন কিনলে ইয়াংজুম নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে স্বাক্ষর করেন। সমঝোতা স্মারকে দুর্নীতির প্রাথমিক অনুসন্ধান, সনাক্তকরণ, প্রমাণকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধসহ অভিজ্ঞতা বিনিময়, উত্তম চর্চা, দুর্নীতি প্রতিরোধে শিক্ষা কর্মসূচিসহ ৮টি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে ছোট-বড় বলতে কোনো ইস্যু নয়, দুর্নীতি দুর্নীতিই। দুর্নীতিই দেশের উন্নয়নের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কেবল দুর্নীতিই দেশের জিডিপি’র ২ থেকে ৩ শতাংশ খেয়ে ফেলছে। তাই দুর্নীতিকে নূন্যতম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। দুর্নীতির মামলায় ভুটানে সাজার হার ৯০ শতাংশ, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় (বিগত পাঁচ মাসে) সাজার হার হয়েছে ৭০ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি দমন করা সত্যিই চ্যালেঞ্জ।

বর্তমানে কমিশন দুর্নীতি দমনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে। আমরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অবলম্বন করেছি। বাংলাদেশে দুর্নীতি দমনে এনজিও, সুশীল সমাজ, মিডিয়া তথা সাধারণ মানুষের আকুণ্ঠ সমর্থন পাচ্ছি। এ ছাড়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচকে ভুটানের অবস্থান ২৭তম। বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে। ফলে এ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভুটানের উত্তম চর্চাগুলো গ্রহণ করতে চায়। এটা হবে দুই কমিশনের মধ্যে দ্বিমুখী যোগাযোগ। স্ব-স্ব দেশের আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সব ধরনের তথ্য বিনিময় করা। ভুটানের দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারপারসন কিনলে ইয়াংজুম বলেন, ভুটান এবং বাংলাদেশের দুর্নীতির প্রক্রিয়া অভিন্ন। ভুটান সরকার দুর্নীতি দমনে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছে। ভুটানের দুর্নীতি দমন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০৬ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করেছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে ছোট-বড় বলতে কিছু ধারণা করা সমীচীন নয়। যেকোনো দুর্নীতিকেই বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই সমঝোতা স্মারকে কৌশল, কর্মসূচি, পদ্ধতি, নতুন নতুন নীতিমালাসহ পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দুদক এবং ভুটান এসিসি একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারবে।

এ ছাড়া পারস্পরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সমঝোতা স্মারক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি কেনাকাটা, নির্মাণ এবং ঘুষ লেনদেন ভুটানের উল্লেখযোগ্য দুর্নীতির ক্ষেত্র। এ ছাড়া স্বজনপ্রীতি এবং বিশেষ আনুকূল্য ভুটানের দুর্নীতির প্রধান উৎস। ফলে ভুটান দুর্নীতিকে কখনো গ্রহণ করেনি, করবেও না। এসময় বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ, এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব আবু মো. মোস্তফা কামালসহ দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ভুটানের রাষ্ট্রদূত মি. সোনম টবডেন রেবজি এবং ভুটান দুর্নীতি দমন কমিশনের চারজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

সাম্প্রতিক