স্টাফ রিপোর্টার॥: ১২ হাজার ৫৫০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয় একনেক। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি তহবিল (জিওবি) থেকে ৯ হাজার ১৯২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৮৭৩ কাটি ৫৪ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দুই হাজার ৪৮৪ কাটি ৮৫ লাখ টাকা মেটানো হবে। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, সভায় ৫ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রকল্প-৩ (এলজিএসপি) এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে সরকার। যেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক স্বাধীনতা, রাজস্ব আহরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। জাতীয় আয়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে প্রকল্পটি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের অবকাঠামো। এসব অঞ্চলে সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়নে ৪১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করবে ডেনমার্কভিত্তিক সহায়তা প্রতিষ্ঠান ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিস (ডানিডা)। ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে এ অর্থায়ন করবে ডানিডা। ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পেরও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে একনেক সভায়। অনুমোদিত ‘মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি), মিরপুর সেনানিবাসের অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২১ কোটি টাকা। ২ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘অনন্যা আবাসিক এলাকার উন্নয়ন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পটিরও অনুমোদন দেওয়া হয়। ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘নাটোর রোড (রুয়েট) থেকে রাজশাহী বাইপাস পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পের। একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া ‘বরিশাল ও সিলেট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এবং রেঞ্জ রিজার্ভ পুলিশ লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩২ কোটি টাকা।
‘পটুয়াখালী-পায়রা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৬ কোটি টাকা। ‘লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রকল্পের-৩ (এলজিএসপি)’ আওতায় যতোগুলো সড়ক নির্মিত হয়েছে, তার একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কত কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করবে, তার একটি নির্দিষ্ট কর্মবণ্টন ভাগ করেই এই পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিটি কাজে স্থানীয় এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করে এভাবেই উন্নয়নের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এসব নির্দেশনা দেন। ৫ হাজার ৫৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন বলে সভা শেষে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। সাংবাদিকদের ব্রিফ কালে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে সরকার।
যেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক স্বাধীনতা, রাজস্ব আহরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। জাতীয় আয়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে প্রকল্পটি। সভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করলে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণী থাকতে হবে। নির্দিষ্ট কোনো রং ব্যবহার করেই প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরতে হবে। যেন স্থানীয় জনগণ সহজেই প্রকল্পের আয়-ব্যয় প্রসঙ্গে একটি ধারণা পেতে পারেন। চর এলাকায় আবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে চর এলাকায় আবাসন বা বসবাসের ঘর-বাড়ি করা যাবে না, পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। এতে করে অল্প জমিতে অধিক মানুষ বসবাস করতে পারবেন এবং জমির সাশ্রয় হবে। ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পেরও চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে একনেক সভায়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোনো উন্নয়ন প্রকল্প নিতে হলে আগে জোয়ার-ভাটার বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। জোয়ার-ভাটা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অনেক সময় জোয়ারের পানি বাড়ে কমে। আমাদের সেসব চিন্তা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে’।
১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নাটোর থেকে রাজশাহী বাইপাস সংযোগ সড়ক’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয় সভায়। এ সড়কে দু’টি রেলক্রসিংয়ের পরিবর্তে ওভারপাস নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বরিশাল ও সিলেট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এবং রেঞ্জ রিজার্ভ পুলিশ লাইন নির্মাণ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩২ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা পুলিশের জরাজীর্ণ ভবন পুনর্নির্মাণের বিষয়ে বড় একটি প্রকল্প একনেক সভায় উত্থাপন করুন।
< Prev | Next > |
---|