স্টাফ রিপোর্টার: আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করছে না ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলো। এক শ্রেণী থেকে অন্য শ্রেণীতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি, সেশন ফি বা একাডেমিক ফি’র নামে কোনো ফি আদায় করা যাবে না- আদালতের এমন নিষেধাজ্ঞার পরও ওসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা কৌশলে অর্থ আদায় করছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেশন ফি’র পরিবর্তে বরং বিভিন্ন নামে অতিরিক্ত ফি আদায় অব্যাহত রাখা হয়েছে। বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টিউশন ফিও। আর সেক্ষত্রে অভিভাবকদের অভিযোগ আপত্তি অনুরোধ কোনোটিই আমলে নিচ্ছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল নিয়ে অভিভাবকদের ক্ষোভ এখন চরমে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পড়াতে গিয়ে অভিভাবকদের বাড়তি আর্থিক চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ তার সন্তানকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে সরিয়েও নিচ্ছেন। অভিভাবকরা বলছেন, এভাবে চলতে পারে না। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরাসরি হস্তক্ষেপ করা উচিত। কারণ চার বছরের চেষ্টার পর গত জুন মাসে একটি নীতিমালা জারি হয়। ওই নীতিমালায় বলা হয়েছে টিউশন ফি ১০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করা যাবে না। কিন্তু এবারের বিভিন্ন স্কুলের টিউশন ফি বৃদ্ধির পরিমাণ ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল নিয়ে গত মে মাসে আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসরকারি স্কুল নিবন্ধন অধ্যাদেশ ১৯৬২ অনুসারে স্কুলগুলোতে অভিভাবকসহ শিক্ষক প্রতিনিধিদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করতে হবে। তাছাড়া স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন করতে হবে এবং ওই অভিভাবক প্রতিনিধির বক্তব্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। ভর্তি ফি, টিউশন ফি নির্ধারণ করবে ম্যানেজিং কমিটি। তাতে অভিভাবক প্রতিনিধিদের মতামত প্রাধান্য পাবে। কিন্তু ইংরেজি স্কুল কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে পুনরায় ভর্তি ও সেশন ফি নেয়নি তবে শিক্ষার্থী প্রতি বিবিধ খরচ হিসাবে মোটা অংকের টাকা নির্ধারণ করে।
সূত্র আরো জানায়, সারাদেশে ১৫৯টি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের নিবন্ধন রয়েছে। ওসব স্কুলে মোট শিক্ষার্থী ৬৪ হাজার ৫০৭ জন। তার মধ্যে ‘ও’ লেভেলের স্কুল ৬৪টি, ‘এ’ লেভেলের ৫৪টি এবং জুনিয়র লেভেলের স্কুল ৪১টি। তাদের মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড নিবন্ধন দিয়েছে ১০২টি স্কুলের। তবে বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যানুযায়ী, সারাদেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৩৫০টি। আর শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩ লাখ। তবে হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান ভালো পরিবেশ নিজস্ব ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বেশিরভাগই ভাড়া বাড়িতে চলছে। নেই পর্যাপ্ত জায়গা, খেলার উপযোগী কোনো মাঠ। তবে টিউশন ফি বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থ আদায়ে কোনো ছাড় নেই।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বহু বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোকে একটা নিয়মের মধ্যে আনার। আমরা এজন্যই একটা নীতিমালা করেছি। এখন তাদের ওই নীতিমালার মধ্যে আনার চেষ্টা করছি।
< Prev | Next > |
---|