vj7tjmjiস্টাফ রিপোর্টার: প্রতিমন্ত্রীর বিতরণ করা ছাগলের মৃত্যু নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুলনার এক সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার ‘অপপ্রয়োগ’ হয়েছে বলে মনে করছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, খুলনায় যে ঘটনা ঘটেছে, আমার মনে হয় এটা অপপ্রয়োগ হয়েছে। আমি মনে করি ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ ঠেকাতে মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করা উচিত। গত ২৯ জুলাই সকালে খুলনার ডুমুরিয়ায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কয়েকটি পরিবারের মধ্যে হাঁস, মুরগি ও ছাগল বিতরণ করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রবাহ পত্রিকার ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি আবদুল লতিফ মোড়ল ওইদিন রাতে একটি পেস্ট দেন, যেখানে লেখা ছিল ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে বিতরণ করা ছাগলের রাতে মৃত্যু’।

ওই পোস্টে প্রতিমন্ত্রীর ছবি ব্যাবহার করায় তার মানহানি হয়েছে অভিযোগ করে লতিফের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন স্থানীয় আরেক সাংবাদিক। এরপর আবদুল লতিফকে গত মঙ্গলবার গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, এ ধরনের বিষয়ে যদি মামলা করতে হয় তাহলে তা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে করা উচিত। তুচ্ছ কারণে, সামান্য কারণে হুট করে একটা মামলা ঠুকে দেওয়া, এটা সঠিক নয়। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের বৈঠকে নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের যে সুপারিশ এসেছে, সে বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন কীভাবে সেনাবাহিনীকে নিয়োগ করবে তা সংবিধানেই বলা আছে। আমাদের আগের নির্বাচনগুলোয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল। এবার সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আলাদাভাবে ভাবার কোনো কারণ নেই। সেনাবাহিনীকে অহেতুক বিতর্কের মধ্যে টেনে আনা ঠিক হবে না। এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই, বিতর্কের প্রয়োজন নেই। সময়ই বলে দেবে সরকারের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন কীভাবে সেনাবাহিনী নিয়োগ করবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেলের স্টেশন ও ভায়াডাক্ট নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেট্রোরেল প্রকল্পের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট এবং নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এসব স্টেশনে ‘উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিক সব ব্যবস্থা থাকবে’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল চলার সময় শব্দ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশে কোনো বিঘœ ঘটাবে না। মেট্রোরেলকে ঢাকাবাসীর ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ হিসেবে বর্ণনা করে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় সৃষ্ট দুর্ভোগ মেনে নিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার কারণে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ আট মাস পিছিয়ে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ওই সময়টা বাদ দিলে মেট্রোরেল প্রকল্প ‘ঠিক পথেই আছে’। সেই মর্মান্তিক ঘটনায় সাতজন জাপানি পরামর্শকের মৃত্যু মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজে ভীতির সৃষ্টি করে। তার রেশ কাটিয়ে জাপানিরা কাজে ফিরতে সময় নিয়েছেন। ফলে আমরা পিছিয়ে গেছি। প্রকল্পের আটটি টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে যাওয়ায় মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ এখন পুরোদমে শুরু করা যাবে বলে জানান মন্ত্রী।

সাম্প্রতিক