dgsdfds1স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের কেশবপুরের শুঁটকি মাছ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। আর শুটকি প্রসেসিং কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা মুখ্য ভুমিকা পালন করছে। কর্মজীবি এসব নারীদের একক প্রচেষ্টা ও একাগ্রতায় এই সফলতা পেয়েছে শুটকি মাছ ব্যবসায়িরা। ইতিপূর্বে কয়েক বছর ধরে এখানকার উৎপাদিত শুটকি মাছ ঢাকা, রংপুর, সিলেট ও সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হয়ে আসছিল। কিন্তু তা এখন দেশের নির্দিষ্ট সীমা পেরিয়ে বর্তমানে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে জানান এর সাথে সংশি¬ষ্টরা জানান। সরেজমিনে উপজেলার কেশবপুর-ত্রিমোহিনী সড়কের ভোগতী নরেন্দ্রপুর এলাকায়, মজিদপুর ও যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের মঙ্গলকোট কেদারপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে শত শত নারীর পাশাপাশি পুরুষ ও উঠতি বয়সি বেকার যুবকরা এই পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। খোলা আকাশের নিচে সারাদিন রৌদ্র পড়বে এমন জায়গায় চাটাইয়ের মাচান তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানো হয়। একাজে তারা খোলা মাঠকে পছন্দসই হিসাবে চিহ্নিত করে সেখানে শুটকি তৈরি করে থাকে। এ তিনটি স্থানে প্রায় ৩’শ শ্রমজীবি মহিলা ও পুরুষ কাজ করছে।

সংশি¬ষ্ট সুত্রে জানা যায়, বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ৬ মাসে এখানে প্রায় ৯শ‘ মেঃটন শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাত করা হয়। সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা শুটকি কিনে গাড়ী বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে। কেশবপুর বর্তমানে শুটকি মাছ তৈরীর একটি অতি পরিচিত মোকামে পরিণত হয়েছে। এখানে উৎপাদিক শুটকি দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। তাতে আয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের বুড়িভদ্রা নদীর তীরে, ভোগতি-নরেন্দ্রপুর এলাকার মাঠে ও কেদারপুর এলাকায় শত শত ছোট বড় মাচান তৈরী করে তার উপর পুঁটি, বাইন, শৈলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানো হয়। মজিদপুর গ্রামে গিয়ে দেখাযায়, এলাকার শ্রমজীবী মহিলারা শুটতি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এ কাজে নিয়োজিত মনোয়ারা খাতুন, রাশিদা খাতুন, জাহানারা বেগম, রেজাউল ইসলাম প্রমুখরা জানান, ৮/১০ বছর ধরে কেশবপুরে এ কাজ শুরু হয়েছে। একাজে পুরুষের চেয়ে মহিলাদের শ্রমিক হিসাবে অগ্রাধিকার দেয়ায় শ্রমজীবী মহিলাদের কাজও বেড়েছে। মাঠের কাজের চেয়ে এ কাজে তারা বেশী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। কারণ হিসেবে বলেন, বসে বসে মাছে লবণ দিয়ে তা রোদে শুকানো হয়। একাজে কষ্ট কম পারিশ্রমিকও বেশী।

মজিদপুর গ্রামের যুবক মিজানুর রহমান বলেন, শুটকি তৈরি করে তিনি তা সৈয়দপুরে চালান করেন। প্রতি বছর ৬ মাস এ ব্যবসা চলে। এ ব্যবসায় আয় দিয়ে তার বছরে সংসার চালিয়েও প্রায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোনাফা থাকে। তিনি আরও জানান, ৬শ‘ টাকা দরে ১ মণ পুঁটি মাছ ক্রয় করে তা শুটকি তৈরি করতে পারলে তা ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ১ কেজি বাইনের শুটকি ৩শ‘ ও ১ কেজি শৈলের শুটকি ৬শ‘ টাকায় বিক্রি হয়। তিনি আরও বলেন, এতে সরকারের আর্থিক সহযোগিতা পেলে এ কাজ করে এলাকার শত শত বেকার যুবক তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারতো। তারপরও শুটকি মাছ ব্যবসা লাভ জনক হওয়ায় এলাকার বেকার যুবকেরা এ পেশায় ঝুকে পড়ছে। স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে প্রায় দেড় শতাধিক বেকার যুবক। কেশবপুরের শুটকি মাছ উন্নত মানের হওয়ায় তা ঢাকা, রংপুর, সিলেট, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করার পর এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ভোগতী নরেন্দ্রপুর গ্রামের রহমত আলী জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি শুটকি মাছ তৈরি করে বাজারজাত করছেন। তবে এব্যবসায় অনেক পুজির দরকার হয়। বেশীর ভাগ শুটকি ব্যবসায়ির দাবি ভাল পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কেশবপুরেই অনেক বড় শুটকির পাইকারি মোকাম তৈরি সম্ভব। কেশবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, এ অঞ্চলের মানুষ শুটকি মাছ না খেলেও এলাকার বেকার যুবকরা মাছের শুটকি তৈরি করে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের বেকারত্ত্ব দুর করে ভাগ্য ফিরিয়েছেন। আশার কথা হলো এলাকার বেকার যুবকদের সাথে সাথে অনেক গরীব শ্রমজীবি নারী পুরুষ এখানে শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

সাম্প্রতিক