jhgfsd6মীর আব্দুল আলীম

আমাদের সড়ক-মহাসড়কের সর্বত্রই যেন চলছে বিশৃঙ্খলার মহোৎসব! এতে প্রাণ যাচ্ছে অকাতরে। ১৩ ফেব্রয়ারীর জাতীয় দৈনিক পতিকার হিসাবে বিগত ৩৬ ঘন্টার ব্যবধানে আমাদের সড়ক কেড়ে নিয়েছে ৫০ তাজা প্রাণ। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক ব্যক্তি। হিসাব কষলে প্রতি ঘন্টায় দেড় জনের প্রাণ গেছে। এভাবেই কি দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে মানুষের মৃত্যুর বিভীষিকা চলতেই থাকবে? দেশে এত বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে যে, দুর্ঘটনা রোধে হালে বিশেষ বাহিনী গঠনের দাবি উঠছে। দেশে সন্ত্রাস দমনে যদি র্যা বব বাহিনী গঠন করা যায়, দুর্ঘটনা রোধে এ-জাতীয় বাহিনী নয় কেন? এক হিসাবে দেখা গেছে, দেশে সন্ত্রাসীদের হাতে শতকরা ৩০ জন লোক মারা গেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭০ জন। ৩০ জনের জীবনসহ অন্যান্য জানমাল রক্ষায় সরকারের একটি বাহিনী থাকলে শতকরা ৭০ জনের জীবনসহ অসংখ্য অহত ও ডলারে কেনা পরিবহন রক্ষায় সরকার সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাহিনী গঠন করছে না কেন? দেশের মানুষের জানমাল রক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দুর্ঘটনা রোধে চরমভাবে ব্যর্থ সরকারকে দেশের মানুষের স্বার্থে যতসম্ভব দ্রুত ভাবতে হবে। আমরা জেনেছি, কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়ই দেশে গড়ে প্রতিদিন ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটছে। এ হিসাবে মাসে ৯০০ জন এবং বছরে ১০ হাজার ৮০০ জন মারা যাচ্ছে। তবে বিআরটিএ’র পরিসংখ্যানমতে এ সংখ্যা দিনে ১৬ এবং বছরে ৫ হাজার ৭৬০ জন। বাস্তবতা হচ্ছে সড়কে প্রাণ যাওয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। সরকারের নানা বিভাগ, একেকজন একেক দিকে। কেউ সঠিক ভাবনা ভাবছে না। তাই যা হবার তাই হচ্ছে।

১২ ফেব্রুয়ারীর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন মানুষের মৃত্যুর খবর পত্রিকায় ছেপেছে। এ খরর যখন পড়ছি তখন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদিতে আরও ১২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ঐ দিন সড়কে মারা গেছে আর ২৫ জন। অর্থাৎ দু’দিনে মারা গেছে ৫০ ব্যক্তি। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুই যেন আমাদের নিয়তি হয়ে উঠছে। সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে হলে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া চালক ও বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে আনা ছাড়া গত্যন্তর নেই। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা পরাবে কে? দিনের পর দিন এ অবস্থা তো চলতে পারে না। এভাবে সমাজ ও রাষ্ট্র মুখ বুঝে থাকতে পারে না। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। সড়ক দুর্ঘটনার মূল অনুষঙ্গ বেপরোয়া গতি। চালকেরা বেপরোয়া গতিতে এবং একের পর এক পাল¬া দিয়ে যান চালানোর কারণেই দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) মতে, মহাসড়কে গড়ে প্রতি মিনিট পরপর একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে ওভারটেকিংএর চেষ্টা করে। একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে পাশকাটাতে গিলেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। এটি প্রতিরোধে মহাসড়কে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। সড়কে শৃঙ্খলা নেই বলেই দুর্ঘটনা। আর সরকারের পক্ষ থেকে শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগও খুব একটা চোখে পড়ে না। সড়ক নিরাপত্তা শুধু মুখে মুখেই। বাস্তবে কর্মসূচি নেই বললেই চলে। বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহাসড়কে বিশেষ ক্যামেরা বসাতে হবে। কম খরচেই এটা করে অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব। সরকারি এক হিসাবে, গত ৩ বছরে গড়ে ২ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। বাস্তবে এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ঐসময়ে হতাহত হয়েছে বলে জানান, চিত্র নায়ক ইলিয়াছ কাঞ্চন। তবে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক হিসাবে, ২০১৬ সালেই ৪ হাজার ৩১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৬ হাজার ৫৫ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার মানুষ। এর আগের বছর প্রাণহানি হয় ৮ হাজারের বেশি মানুষের। আর এটাই বাস্তব চিত্র। আইন না মানাই হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশসহ চলমান প্রশাসন এ আইন প্রয়োগে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে তাদের ঢেলে সাজাতে হবে, অন্যথায় নতুন করে দুর্ঘটনা রোধে বিশেষ বাহিনী গঠন করতে হবে। দুর্ঘটনার অন্যতম কারণের মধ্যে ১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চলাচল ২. মোবাইল ফোন ব্যবহার ৩. অতিরিক্ত যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন ৪. ট্রাফিক আইন না মানা ৫. নিয়োজিতদের দায়িত্বে অবহেলা ৬. চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, অদক্ষতা ও অসতর্কতা। এ ৬টি বিষয়ে সরকার সজাগ দৃষ্টি দিলে দেশে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু অনেকাংশে কমে যাবে। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, আর এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে, সরকারিভাবে নতুন নতুন সুপারিশ তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। পাগলা ঘোড়ার লাগামও মনে হয় টেনে রাখা সম্ভব, কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষের নিস্তার নেই, তার লাগাম টানে কার সাধ্য! সড়ক দুর্ঘটনার এমন মৃত্যুমিছিল যেন নিত্যদিনের দুঃসংবাদ! বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১২ হাজার মানুষের।

বর্তমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম। দুর্ঘটনাকবলিত কোনো যানবাহনের চালককে আটক করা হলেও বেশির ভাগ সময়ই তাদের শাস্তি হয় না। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সমস্যা, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা, জরুরি ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনাহীনতাও দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে দায়ী। শুধু চালকের লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে শতভাগ নৈতিক ও কঠোর থাকতে পারলেই দুর্ঘটনা বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এটা ঠিক যে, দেশের বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার সঙ্গে সংগতি রেখে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। এসব যান চালানোর জন্য চাই দক্ষ ও বিবেচক চালক। এই বিপুলসংখ্যক যোগ্য চালক তৈরির জন্য দেশে কি কোনো সুষ্ঠু কার্যক্রম রয়েছে? এমনকি লাইসেন্সপ্রাপ্ত চালকদের চলার পথে আরো সতর্ক থাকা এবং ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চলার ব্যাপারে কোনো কর্মশালা কিংবা প্রশিক্ষণের পরিকল্পনাও কি নিয়ে থাকে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ? সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আসলে সব পক্ষকে আন্তরিক হতে হবে। একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে উদ্যোগী হতে হবে। না হলে যে কেউ যে কোনো দিন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ইহধাম ত্যাগ কিংবা পঙ্গুত্ববরণ করবে, তা নিঃসংশয়ে বলা যায়। ক’দিন আগে গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ১৩ লাখেরও বেশি। অথচ বৈধ চালকের সংখ্যা মাত্র ৮ লাখ। বাকি যানবাহন যাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বৈধ নয়। অনেকের একাধিক লাইসেন্সও আছে। স্বাভাবিকভাবেই এ অবৈধ লাইসেন্সধারী গাড়িচালকরা গাড়ি চালাতে গিয়ে আইনের ধার ধারেন না। সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত নন, এমন চালকের সংখ্যাও নেহায়েতই কম নয়। এই চালকদের পেছনে আছে শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষকতা, যে কারণে এদের শনাক্ত করাও হয়ে পড়েছে দুষ্কর। সংগত কারণে চালকরাও তাই বেপরোয়া। বিষয়টি নিঃসন্দেহে ভয়াবহ। কেননা এ পরিস্থিতি একটি দেশের পক্ষে কিছুতেই স্বস্তির হতে পারে না। স্মর্তব্য যে, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে এ যাবৎ অনেক কথা বলা হয়েছে। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, সড়কপথ আজো নিরাপদ হলো না। সড়কপথের ‘যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত’ কথার কথা হয়েই থেকে গেল। মাঝেমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার যেসব তথ্য গণমাধ্যমে উঠে আসে তা একটি দেশের জন্য দুর্বিষহ এবং আতঙ্কের। অথচ সরকারের কর্তব্য হওয়া দরকার জনগণের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া।

এক গবেষণায় দেখা যায়, নানা কারণে দেশে প্রতি ১০ হাজার মোটরযানে ১০০টি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে। উন্নত দেশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এক হাজার মোটরযানে দুর্ঘটনা ঘটে সর্বোচ্চ তিন দশমিক পাঁচ ভাগ। অন্যদিকে আমাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার যানবাহনে ১৬৩ জন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (এআরআই) পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হচ্ছে। নিহতের ৮০ শতাংশের বয়স পাঁচ থেকে ৪৫ বছর। নিহতদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পথচারী। যাদের ২১ শতাংশের বয়স ১৬ বছরের নিচে। দুর্ঘটনায় আহত ১৫ শতাংশ লোক মারা যায় ঘটনার ১৫ মিনিটের মধ্যে। দেশে ১৬ লাখ রেজিস্টার্ড গাড়ি রয়েছে আর লাইসেন্স পাওয়া ড্রাইভার রয়েছে মাত্র ১০ লাখ। ৪ লাখ ড্রাইভারের ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং ড্রাইভিং ট্রেনিং দেয়া ও তাদের জন্য লাইন্সেসের দরকার আছে। তা না হলে প্রতিনিয়তই এভাবে অকাতরে ঝরবে আমাদের প্রাণ। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই থানা পুলিশ পয়সা পেয়ে মীমাংসা করে দিচ্ছে এসব হত্যাকন্ডের ঘটনাগুলো। কতটাই না অসভ্য আমরা। মানুষ মরবে আর ১০-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে সব মীমাংসা হবে; হবে সব স্বাভাবিক। একি ভাবা যায়? সরকারি হিসাব মতে, ১৯৯৯ সালে ৪ হাজার ৯১৬ জন, ২০০০ সালে ৪ হাজার ৩৫৭ জন, ২০০১ সালে ৪ হাজার ৯১ জন, ২০০২ সালে ৪ হাজার ৯১৮ জন, ২০০৩ সালে ৪ হাজার ৭ ৪৯ জন, ২০০৪ সালে ৩ হাজার ৮২৮ জন, ২০০৫ সালে ৩ হাজার ৯৫৪ জন, ২০০৬ সালে ৩ হাজার ৭৯৪ জন, ২০০৭ সালে ৪ হাজার ৮৬৯ জন, ২০০৮ সালে ৪ হাজার ৪২৬ জন, ২০০৯ সালে ৪ হাজার ২৯৭ জন, ২০১০ সালে ৫ হাজার ৮০৩ জন, ২০১১ সালে ৩ হাজার ৬৮৮ জন, ২০১২ সালে ৫ হাজার ৯১১ জন, ২০১৩ সালে ৪ হাজার ৮৬৫ জন এবং ২০১৪ সালে ৩ হাজার ৯৭৫ জন, ২০১৫ সালে ৩ হাজার ৮৬২, চলতি ২০১৬ সলের আগষ্ট পর্যন্ত আনুমানিক ২ হাজারেরও বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। প্রতিবছরই এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে আর তা রোধ করা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা; এ যেন অলঙ্ঘনীয় ব্যাপার; মৃত্যুদূত ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার মতো। ঘর থেকে বের হয়ে আবার ঘরে ফেরা যাবে কি? এমন সংশয় বরাবরই থেকে যায়। এ প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব পাওয়া কঠিন বাংলাদেশে। প্রশ্ন হলো, সড়ক দুর্ঘটনায় আর কত প্রাণ ঝরে যাবে? নিত্যনৈমিত্যিক এ সড়ক দুর্ঘটনার দায় কার? কে দেবে এ প্রশ্নের উত্তর? প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালমৃত্যু বরণ করতে হচ্ছে মানুষকে। ফলে এ প্রশ্ন করা অসঙ্গত নয় যে, আর কত মানুষকে মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে এ অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়? এ জন্য কি সরকারের মোটেও দায় নেই?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৯৯৭ সাল থেকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা করে আসছে। এর মধ্যে সাতটি পরিকল্পনা হয়েছে। সর্বশেষ পরিকল্পনায় ২০২৪ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা সড়ক দুর্ঘটনার যে হিসাব প্রকাশ করছে, তাতে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। বরং সড়কে মৃত্যুও সংখ্যা আরও বাড়ছে। কথায় বলে ‘ঘুমন্ত লোকের ঘুম ভাঙানো সম্ভব, কিন্তু জেগে জেগে ঘুমালে তা কঠিন’। শত চেষ্টায়ও তাকে জাগানো যায় না। আমাদের সড়ক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যেন সেই দশা। কয়েক মাস আগে খোদ জাতীয় সংসদে অনভিজ্ঞ ও অল্পবয়সী হেলপার বাস-মিনিবাস চালানোর ফলে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানালেন যোগাযোগমন্ত্রী। তিনি বলেন, গাড়ির সংখ্যা যে হারে বাড়ছে সে হারে দক্ষ চালক বাড়ছে না। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক অমূল্য প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে আমাদের জীবন থেকে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষক, শিশু, নববধূ-বরসহ পুরো বরযাত্রী, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা এমনকি সাবেক মন্ত্রীও এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে নিহত হওয়ার খবর আমরা পত্রিকার পাতায় প্রত্যক্ষ করেছি, যার একটিও সহজভাবে মেনে নেয়া যায় না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন মালিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে সমন্বিত আন্তরিকতা, সচেতনতা, দৃঢ় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা আমরা আশা করি।
লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, গবেষক ও কলামি

 

সাম্প্রতিক