স্টাফ রিপোর্টার: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় এক বাংলাদেশি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছেন, তার ‘বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে’ গুলি করা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসকরা। নিহত মোস্তাফিজুর রহমানের (৪৮) বাড়ি জামালপুর জেলা সদরে। ডাইভারসিটি ভিসা-ডিভি লটারিতে জয়ী হয়ে দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীসহ ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার বেকার্সফিল্ড সিটিতে সদ্য কেনা বাসার ড্রাইভওয়েতে স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৫টায় মুস্তাফিজের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তার স্ত্রী। তৎক্ষণাৎ তিনি পুলিশে খবর দিলে অ্যাম্বুলেন্সসহ এসে তারা মোস্তাফিজকে হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানান মোস্তাফিজের বন্ধু কামরুল ইসলাম শিপন। তিনি বলেন, মোস্তাফিজের বাম বুকে আটটি গুলি পেয়েছেন চিকিৎসকরা; তার বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে পরপর আটবার গুলি করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা। ক্যালিফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেস সিটি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে বেকার্সফিল্ড সিটি।
সম্প্রতি সেখানে বাড়ি কেনার পর মাসখানেক আগে পরিবার নিয়ে মোস্তাফিজ সেখানে উঠেছিলেন জানিয়ে শিপন বলেন, এ উপলক্ষে সোমবারই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য গিয়ে প্রথম লসএঞ্জেলসে উঠেছিলেন এই বাংলাদেশি, যিনি সেখানে যাওয়ার আগে বাংলাদেশে অ্যাকমি ল্যাবরেটরিজের আঞ্চলিক ম্যানেজার পদে কর্মরত ছিলেন। লসএঞ্জেলেসে যাওয়ার বছরখানেক পরই বেকার্সফিল্ডে ‘আমেরিকান এক্সপ্রেস ট্যাক্সি’ নামে একটি ট্যাক্সি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। খুব দ্রুত সেটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তিনি নিজেও ট্যাক্সি চালাতেন। রাতের শিফটে কাজ করে প্রতিদিন ভোর ৪টার দিকে ঘরে ফিরতেন। সোমবার নির্ধারিত সময়ে ঘরে ফিরে না আসায় তার স্ত্রী ঘরের বাইরে এসে দেখেন তার গাড়ি পার্ক করা; মোস্তাফিজের লাশ ড্রাইভওয়েতে পড়ে রয়েছে। তাকে কারা কী কারণে হত্যা করেছে তা এখনও বের করতে না পারলেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারকে জানানো হয়, ঘাতক গ্রেফতারে তারা তৎপর রয়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে ‘অমায়িক’ স্বভাবের মোস্তাফিজুরের ট্যাক্সি কোম্পানির ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখে কেউ প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা। তারা বলছেন, টার্গেট করেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় লসএঞ্জেলেসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা মমিনুল হক বাচ্চু উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় দুর্বৃত্তের গুলিতে তিন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। মোস্তাফিজুরের মেয়ে সদ্য হাই স্কুল শেষ করেছেন। দুই ছেলে যাচ্ছে হাই স্কুলে। স্ত্রী কাজ করেন স্থানীয় একটি হাসপাতালে, নার্স হিসেবে। আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা স্থানীয় ডাউন টাউন মসজিদে জানাজার পর ওইদিন বিকালে তাকে দাফন করা হবে বলে জানান মুস্তাফিজের বন্ধু শিপন।
| Next > |
|---|
