স্টাফ রিপোর্টার: উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের পেপারবুক পড়া শেষ হয়েছে। আগামি ২১ মে এ বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে এ দিন নির্ধারণ করা হয়। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। গত সোমবার থেকে এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের পেপারবুক পড়া শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা পেপারবুক পড়েন। অন্যদিকে ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য ১২ জন আইনজীবীকে আদালতের বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরি) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তাঁদের লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দিতে বলেন আপিল বিভাগ। পরে অ্যামিকাস কিউরিরা লিখিত বক্তব্য আদালতে জমা দেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ১২ আইনজীবী হচ্ছেনÑবিচারপতি টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার আজমালুল কিউসি, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, এম আই ফারুকী।
বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে আনতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করা হয়। পরে ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। পরে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ওই সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ৫ মে আদালত সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে ১৬তম সংশোধনী অবৈধ বলে রায় দেন। তিন বিচারকের মধ্যে একজন রিট আবেদনটি খারিজ করেন। এর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে রায় প্রকাশিত হয় গত বছরের ১১ আগস্ট এবং রিট খারিজ করে দেওয়া বিচারকের রায় প্রকাশিত হয় ৮ সেপ্টেম্বর। দুটি মিলে মোট ২৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। ওই আপিলের ওপর শুনানি চলছে।
< Prev | Next > |
---|