hc-hcস্টাফ রিপোর্টার॥ জীবন রক্ষায় মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়া ২০টি কোম্পানির উৎপাদন বন্ধে জারি করা রুলের উপর শুনানি বুধবার শেষ হয়েছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি রায় দেবে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি আতাউর রহমান খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৬ সালের ৭ জুন ২০টি কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন এক সপ্তাহের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে অপর ১৪টি প্রতিষ্ঠানের এন্টিবায়েটিক (ননপেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন) ওষুধ উৎপাদনও বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের পর দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ চারজনকে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধে পুলিশ মহাপরির্শক (আইজিপি) ও র্যাহবের মহাপরিচালককে সর্বাত্মক সহযোগিতারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওইদিনই মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০টি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল ও ১৪টি কোম্পানির এন্টিবায়েটিক লাইসেন্স বাতিলে সরকারের নিস্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র্যা বের মহাপরিচালক ও পরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ওষুধ প্রশাসনের পরিচালক এবং ওষুধ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সেই রুলের ওপরই গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত ৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।

এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এ- পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৬ সালের ৫ জুন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। আবেদনে বলা হয়, ভেজাল এবং নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশেষজ্ঞ কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন শেষে এ বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন পেশ করে। যাতে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়াস্তভাবে ব্যর্থ হওয়া ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় রিট আবেদনটি করা হয়।

মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ ২০ কোম্পানি হলো- এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যাল, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, জলপা ল্যাবরেটরিজ, কাফমা ফার্মাসিউটিক্যাল, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যাল, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যাল, রিমো কেমিক্যাল, রিদ ফার্মাসিউটিক্যাল, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যাল, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, স্টার ফার্মাসিউটিক্যাল, সুনিপুণ ফার্মাসিউটিক্যাল, টুডে ফার্মাসিউটিক্যাল, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড। এছাড়া মানসম্মমত এন্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদনের ব্যর্থ ১৪টি কোম্পানি হচ্ছে আদ-দ্বীন ফার্মাসিউটিক্যাল, আলকাদ ল্যাবরেটরিজ, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যাল, বেঙ্গল ড্রাগস, ব্রিস্টল ফার্মা, ক্রিস্ট্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যাল, এমএসটি ফার্মা, অরবিট ফার্মাসিউটিক্যাল, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ, পনিক্স কেমিক্যাল, রাসা ফার্মাসিউটিক্যাল এবং সেভ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।

সাম্প্রতিক