স্টাফ রিপোর্টার: হাই কোর্টের নির্দেশের পর কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রতিবন্ধী কিশোরী ‘ধর্ষণ’ ঘটনার মূল আসামিসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে হোমনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মূল আসামি উপজেলার ভাঙ্গানগর গ্রামের নজরুল ইসলাম, তার বাবা আবদুল কুদ্দুছ, বোন রোজিনা আক্তার ও ভাবি আমেনা বেগম। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে গত সোমবার দুপুরে স্বপ্রণোদিত হয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চ নজরুলকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। নির্দেশের পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সেইসঙ্গে আসামিকে গ্রেফতারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হল তা ১৯ জানুয়ারি আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে কুমিল্লার পুলিশ সুপার ও বাঙ্গরা থানার ওসিকে।
‘কুমিল্লার বাঙ্গরা: বোনকে ধর্ষণ ভাইকে কোপ থানায় সালিশ’ শিরোনামে গত ৭ জানুয়ারি কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজিবুর রহমান। কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৩ ডিসেম্বর বাঙ্গরার শ্রীকাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ধর্ষণ করে তারই প্রতিবেশী নজরুল নামের ৩০ বছর বয়সী এক যুবক। স্থানীয় কয়েকজন সেদিন নজরুলকে হাতেনাতে ধরলেও প্রভাবশালীর ছেলে হওয়ায় পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মেয়েটির ভাই পরদিন নজরুলের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ জানালে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। মেয়েটির মা সব ঘটনা জানিয়ে ১ জানুয়ারি বাঙ্গরা থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করে থানায় সালিশ করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার উদ্েযাগ নেয় বলে পত্রিকাটির খবর। তবে বাঙ্গারা বাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর নজরুল ইসলাম প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে এলাকার অনয় ব্রিকস নামের একটি ইটভাটায় নিয়ে শ্লীলতাহানি করে।
এ সময় ওই প্রতিবন্ধী চিৎকার করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। এরপর প্রভাবশালীদের চাপের মুখে নজরুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ খবর শুনে মেয়েটির ভাই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে নজরুল ও তার সহযোগীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় মেয়েটির মা অভিযোগ দিলে গত ৭ জানুয়ারি পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। তবে মেয়েটির পরিবার জানিয়েছে তারা ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনেছিল।
< Prev | Next > |
---|