kader-vaiস্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সব সমস্যার সমাধান হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানে যদি সংলাপের কোনো সুযোগ থাকে, তাহলে গণতন্ত্রের জন্য সংলাপ হবে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গতকাল সোমবার সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা উপপরিষদ আয়োজিত ‘বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য : খ-চিত্র প্রদর্শনী’র উদ্বোধনকালে কাদের এ কথা বলেন। বিএনপি-জামায়াতের বর্বরোচিত তান্ডব ও অগ্নিসন্ত্রাসের এ খ-চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ। ওবায়দুল কাদেও বলেন, নির্বাচন হবে। তবে সংবিধানে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই হবে।

সংবিধান অনুযায়ী গণতন্ত্রের স্বার্থে যা করা দরকার তাই করা হবে। সংলাপ রাষ্ট্রপতি করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি তাও করেনি। এ ছাড়া আমরা সে প্রস্তাবে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে, এমন প্রস্তাবও দিয়েছি। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের লেবাস পড়া তারা আসলে গণতন্ত্র হত্যার শিকারী। সে উগ্রবাদী বিষকৃক্ষটির কিন্তু শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়েছে। রাতারাতি তা উপড়ে ফেলা যাবে, এমন ভাবা ঠিক হবে না। সকল বিশ্বাসের ঠিকানা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। খ-খ- আন্দোলন করে এ বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলা যাবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করে সংলাপের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন কেন বার বার সংলাপের কথা বলছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বেশিদিন আগের কথা নয়, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর কথা শুনে শোকার্ত মা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে সমবেদনা জানানোর সুযোগ না দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী তাকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর সে আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করেছেন। কাজেই ঘরের দরজা বন্ধ করে সংলাপের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করে সংলাপের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন যারা গণতন্ত্রের কথা বলে মায়াকান্না করেন, তারা গণতন্ত্র হত্যার শিকারী। সে শিকারী এখন উদ্ধারের জন্য মায়াকান্না করছে। আন্দোলনের নামে তারা নিরপরাধ শিশু, শ্রমিক, রিকশা চালক, ট্রাক ড্রাইভার, শিক্ষককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। দগ্ধ করেছে। কাজেই তাদের কান্নার জবাব কে দেবে? আজ গণতন্ত্রের জন্য, সংলাপের জন্য মায়াকান্না করছেন? আপনাদের সহিংস আন্দোলনের বেদী সাধারণ খেটে খাওয়া নিরপরাধ মানুষকে আত্মহুতি দিতে বাধ্য করেছে। মন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় তাদের বর্বরোচিত হামলার শিকার। আমরা কখনো ষড়যন্ত্র করিনা। বরং শিকার হই। কখনো হত্যা করতে চাইনি। কিন্তু হত্যার শিকার হয়েছি। ১৫ আগস্টের নেপথ্যে কারা ছিল? আত্মস্বীকৃত খুনিরাই তা বলে গেছে। কিন্তু খুনি মঞ্চের নেপথ্যে কারা ছিল? যারা খুনিদের দেশ থেকে পলায়নে সহায়তা করেছে, যারা খুনিদের পুরস্কৃত করে বিদেশে দূতাবাতে চাকরি দিয়েছে, তারাই। তিনি আরো বলেন, ৪ নভেম্বর আমরা শিকার হয়েছি। এ ছাড়া ২১ আগস্টেও শিকার হয়েছি। যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় এফবিআই দিয়ে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। মামলার আলামত নষ্ট করা হয়েছে। জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে।

তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নৈশভোজের। ছেলে হারানো শোকার্ত মাকে সমবেদনা জানবাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে প্রত্যাখান করে সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন যে বিষয়ে সংলাপ, তা নিয়ে তো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। তাহলে আবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কিসের সংলাপ? সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামি নির্বাচন হবে। কাদের বলেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সংলাপের প্রস্তাব খালেদা জিয়া কী অশ্রাব্য, নোংরা ভাষায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এটা আমরা ভুলে যায়নি। এখন সংলাপের কথা বলছেন, সেই দিন কেন সংলাপ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন? এ প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে সংলাপের পরিবেশ নষ্ট করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, পুত্রশোকে শোকাহত মাকে দেখতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর খালেদা জিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখে ছিলেন।

সাম্প্রতিক