1h8gkস্টাফ রিপোর্টার: ধলেশ্বরী নদীর তীরে মুন্সীগঞ্জের শহর রক্ষা বাঁধ। বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে কোনো সংস্কার না করা এবং নানাবিধ কারণে শহর রক্ষা বাঁধটি আজ হুমকির মুখে। বাঁধকে কেন্দ্র করে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, মাদরাসা, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শহর রক্ষা বাঁধটির কার্যক্রম ২০০৫ সালে শুরু হয়। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ২৭ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধটির কাজ শুরু হয়। এই কাজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৬ কোটি টাকা। বাঁধটি মুক্তারপুর সেতুর কাছ থেকে শুরু হয়ে লঞ্চঘাট, রমজানবেগ ও মুন্সিরহাট হয়ে শহর ঘুরে পুনরায় মুক্তারপুর সেতুর কাছে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র তিন কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে।

হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার আকলিমা বেগম বলেন, বেড়ি বাঁধের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, মাদ্রাসা এবং ঘরবাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া এই বাঁধকে কেন্দ্র করে অনেক ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালিত হয়ে থাকে। নানা কারণে এই বেড়ি বাঁধ ধ্বংসের মুখে। পুরো শহরকে বাঁচাতে হলে অতি দ্রুত বাঁধটি সংস্কার করা হোক।
মালিপাথর এলাকার দেলোয়ার হোসেন জানান, শহররক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে মুক্তারপুর থেকে মিরকাদিম নদী তীরবর্তী রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই এই রুটে ঝুঁকি নিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল করে। ফলে বাঁধটিতে ফাঁটল ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল বলেন, বড় প্রেজেক্ট হাতে নেওয়ার কারণে বরাদ্দের টাকা শেষ। আগামি বছর এই শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য একটি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ভাঙনের কোনো ভয় নেই। ব্যবসায়িক নদী বন্দর এলাকায় বাঁধের পানির নিচে পিচিং করা আছে, সেটি ঠিক আছে। বড় বড় লঞ্চ, বাল্কহেড এসে বাঁধে ধাক্কা দেওয়া তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লৌহজংয়ের কয়েকটি পয়েন্টে ইতোমধ্যে কাজ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে আমরা শ্রীঘ্রই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে শহর রক্ষা প্রকল্পের (ফেস-২) আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৭ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এই টাকায় মাত্র তিন কিলোমিটার কাজ ২০১২ সালে এসে শেষ হয়। এরপর টাকার অভাবে বাঁধের কাজ আর হয়নি।
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব জানান, বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়া ছাড়াও ধলেশ্বরী নদীতে প্রতিদিন বাল্কহেডের ধাক্কায় পৌর এলাকার রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বাঁধের ক্ষতি হলে শহরের অধিকাংশ জায়গা প্লাবিত হবে। তাই বর্ষা মৌসুমে নদীতে আনলোড ও বালুবাহী বাল্কহেড যাতে নদী তীরবতী এলাকায় দ্রুত গতিতে না আসে এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত।

জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা জানান, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সন্ধ্যার পর থেকে বেড়ি বাঁধে যেসব বাল্কহেড ভিড়ে তার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পদ্মার ভাঙন এলাকায় কাজ করছে। যেহেতু তাদের লোকবল কম তাই শিগ্রই তারা ব্যবস্থা নেবে।

 

সাম্প্রতিক