power plantস্টাাফ রিপোর্টার: দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সেজন্য সংশোধন করা হচ্ছে পিডিবির আইন। মূলত ক্রমান্বয়ে দেশের বিদ্যুত উৎপাদনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পিডিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ পিডিবি গঠন করা হয়। তার আগে ১৯৫৯ সালে বাংলাদেশ পানি এবং বিদ্যুত উন্নয়ন অথরিটি গঠন করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বিভক্ত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডকে পৃথক করা হয়। তখনকার বাস্তবতায় বিদ্যুত উৎপাদন, সঞ্চালন এবং বিতরণের সকল দায়িত্ব ছিল পিডিবির। কিন্তু পরবর্তীতে বিদ্যুত খাতের সম্প্রসারণ হলেও আইন আর সংশোধন করা হয়নি। এখন সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ দেশে ১৯৯৬ সালের পর থেকে বেসরকারি উৎপাদনকারীরা বিদ্যুত খাতে যুক্ত হয়েছে। এখন মোট বিদ্যুতের প্রায় অর্ধেকই বেসরকারি খাত থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। যদিও বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ১৯৯৬ সালে প্রণীত প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি অনুসরণ করা হচ্ছে। আইপিপির ক্ষেত্র দরপত্র করে বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পরবর্তীতে সরকার দ্রুত বিদ্যুত এবং জ্বালানি খাতের বিকাশে বিদ্যুত জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ প্রণয়ন করে। ওই আইনে সরকার দরপত্র ছাড়াই পারস্পরিক দর কষাকষির মাধ্যমে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দিচ্ছে। এখন দেশের বেসরকারি খাতের ছোট বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ওই আইনে স্থাপন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, সারাদেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের একক ক্রেতা পিডিবি। ওসব বিদ্যুত পিডিবি ক্রয় করে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে। তারপর বিতরণ কোম্পানি গ্রাহকের কাছে বিদ্যুত বিক্রি করে। তবে এই বিদ্যুত সঞ্চালন করে থাকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ পিজিসিবি। বিদ্যুত বিভাগ অনেক দিন থেকেই সঞ্চালনে বেসরকারি কোম্পানির অংশগ্রহণের কথা বলে আসছে। যদিও প্রস্তাবিত নতুন আইনে এ খাতের সংস্কারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত নেই। প্রস্তাবিত আইনে ভাড়ায় চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রকে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র বলতে প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬-এর আওতা বহির্ভূত বেসরকারি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র বোঝাবে। তার আগে ১৯৭২ সালের অধ্যাদেশে বিদ্যুত উৎপাদনে পৃথক পৃথক জ্বালানির উল্লেখ ছিল না। ক্রমান্বয়ে প্রযুক্তির উৎকষের ফলে বিদ্যুত উৎপাদনে বহুমুখী শক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। আইনের সংস্কারে আণবিক, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, কয়লাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সূত্র আরো জানায়,সরকার বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড থেকে বিতরণ অংশকে পৃথক করতে চাইছে। কিন্তু পিডিবি সরকারের ইচ্ছায় বাধা প্রদান করে আন্দোলনে নামে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করার জন্য পিডিবিকে পেট্রোবাংলার মতো কর্পোরেশনে রূপান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়। পিডিবির আইনে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি (১) পিও ৫৯, ১৯৭২ দ্বারা সৃষ্ট বোর্ডের স্থাবর/অস্থাবর সম্পদের মালিকানা বোর্ডের অধীনে থাকবে। সংস্কার কার্যক্রমের আওতায় গঠিত বা গঠিতব্য বিভিন্ন কোম্পানি বোর্ডের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হিসাবে গণ্য হবে। বোর্ড সাবসিডিয়ারি কোম্পানির দক্ষতা ও পরিকল্পনা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ ইত্যাদি প্রদান ও এতদসংক্রান্ত প্রবিধি প্রণয়ন করতে পারবে। কোম্পানিগুলো প্রয়োজনে বোর্ডের নিকট হতে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট সার্ভিস গ্রহণ করতে পারবে। তার বিপরীতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি সার্ভিস চার্জ প্রদান করবে।

সাম্প্রতিক