গত ১২ই শে মার্চ ২০২৩ সিডনির ইংগেলবার্ণের গ্রেগ পার্সিভাল হলে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৩ তম জয়ন্তী উজ্জাপন করে।
এ উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাই কমিশনার ও কনসাল জেনারেল শুভেচ্ছা বাণী প্রদান করেছেন।
সংগঠনের সভাপতি ড.রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. প্রদীপ রায়হানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল জনাব শাখাওয়াৎ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মাসুদুল হক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ।
অনুষ্ঠান শুরুর প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সেই ভাষনের অংশবিশেষ প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপরে পরিষদের শিল্পীবৃন্দ সমবেত কন্ঠে “এক সাগরে রক্তের বিনিময়ে” গানটি পরিবেশন করেন। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করে শোনানো হয় ও স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের জন্য দোয়াপাঠ করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকঃ ড. প্রদীপ রায়হান।
একটি বিশেষপর্বে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধিত করা হয়। তাঁদের ফুলের তোড়া দিয়ে সম্বর্ধিত করেন সম্মানিত কনসাল জেনারেল মোঃ শাখাওয়াৎ হোসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ মুলক বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহিম বেলাল, ডাঃ হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, মিজানুর রহমান তরুন, ড. মহিবুল ইসলাম, সৈয়দ আহমেদ মজুমদার ও কায়সার আহমেদ।
অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব পি এস চুন্নুর অকাল প্রায়ানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি ড. রতন কুন্ডু একটি শোক প্রস্তাব পাঠ করে শোনান।
সংগঠনের সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান বাংলাদেশের উপর আলোচনা করেন। জাতির জনক তাঁর পুরো জীবনেই দেশকে তথা দেশের মানুষকে ভালোবেসে অপরিসীম কষ্ট ও ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, যা পুরো জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তিনি আরো বলেন সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন পরবর্তী প্রজন্মকে ব্যক্তি জীবনে ধারণ করার উপরও তিনি গুরুত্ত্বারোপ করেন।
প্রধান অতিথি কনসাল জেনারেল জনাব শাখাওয়াৎ হোসেন বক্তব্যের শুরুতেই এরকম একটি বিশাল ও তাৎপর্যপূর্ণ আয়োজনের জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও তার অগ্রযাত্রায় তারই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন। কিশোর কিশোরীদের মধ্যে লামিস সৈয়দ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের উপর বক্তব্য রাখে।
মালিক সাফি জাকির মূল পরিকল্পনায় ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ায় সাংস্কৃতিক সম্পাদকঃ ফারিয়া নাজিমের সঞ্চালনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশিত হয় | এতে অংশগ্রহণ করেন, ফারিয়া আহমেদ, নিলুফা ইয়াসমিন, লামিয়া আহমেদ লুনিয়া, সুলতানা নূর ও অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ। এবারের বিশেষ আকর্ষন ছিলো তানিম মান্নানের পরিকল্পনার ও গ্রন্থনায় বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পী আশুতোষ সূজন ও “জলের গান” ব্যান্ড এর কনক আদিত্যর অনবদ্য বাউল সংগীত ও লোকগীতি। যন্ত্রসংগীতে সহযোগীতা করেন বিজয় সাহা, উমাশংকর, শাহরিয়ার ও সাকিনা বেবী। কবিতা আবৃত্তি করেন পূরবী বড়ুয়া ও পলি ফরহাদ। অর্পিতা সোম চৌধুরীর নির্দেশনায় দেশের গানের সাথে দুটি নৃত্য পরিবেশন করে মানহা, আয়দা, পরশী, নীড় ও সারিতা। মৌসুমী সাহার নির্দেশনায় নৃত্যান্জলী ডান্স একাডেমির বড়দের গ্রুপে মৌসুমী সাহা, রিতিশ্রী বিশ্বাস, ফাল্গুনী দাস, ও যুই সেন পাল দেশের গানের সাথে নাচ পরিবেশন করেন। নৃত্যান্জলীর ছোটদের গ্রুপে নাচ পরিবেশন করে আরাধ্যা দেব, জারা হোসেইন ও আদৃতা চৌধুরী। তাঁদের গীতিনৃত্য দর্শক শ্রোতাদের বিমুগ্ধ করেছে।
সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। আগত সব অতিথিদের এর পর নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।